শিশুর খেলাধুলায় বাবা মায়েরা যেসব ভুল করে থাকেন

Sishuder-Kheladhula-796x476-1.png

শিশুদের মধ্যে প্রাকৃতিক ভাবেই খেলাধুলার প্রতি প্রবল আগ্রহের সঞ্চার ঘটে। খেলা তার এমন একটি মৌলিক ক্রিয়া যা সে স্বতঃস্ফূর্তভাবেই করে। শিশুর স্বাভাবিক বিকাশের জন্য এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেটি হতে পারে ঘরের ভেতরে বা বাইরে। তবে যেখানে বা যে ধরনের খেলায়ই সে ব্যাস্ত থাকুক না কেনো, অভিভাবকদের কিছু বিষয় মাথায় রাখা জরুরী।

শিশুরা যখন মনোযোগ দিয়ে খেলতে থাকে তখন অকারনে তার সাথে কথা বলতে যাওয়া, তাকে আদর করা, বা তার মনোযোগ নষ্ট হয় এমন কিছু করা অনুচিত। তাকে তার মত খেলতে দিন।

শিশুরা একসাথে খেলাধুলা করার সময় একটু-আধটু ঠোকাঠুকি বা মনোমালিন্য হতে পারে। খেলনা নিয়ে টানাটানি, কান্নাকাটি এগুলো বাচ্চাদের ক্ষেত্রে খুবই স্বাভাবিক বিষয়। এগুলো তাদেরকেই সমাধান করতে দিন। এতে করে তারা একে অন্যের সাথে মানিয়ে নেওয়া, খেলনা বা জিনিসপত্র শেয়ার করতে শিখবে।

শিশুরা যা দিয়ে খেলতে পছন্দ করে তাকে তাই দিয়ে খেলতে দিন। অবশ্যই সেটি যেন ক্ষতিকারক কিছু না হয়। খেলার বস্তু বলতে যে খেলনাই হতে হবে বিষয়টি এমনও নয়। শিশু কি নিয়ে খেলবে সেটি একান্তই তার নিজের ইচ্ছা ও কল্পনাশক্তির উপর নির্ভর করে। আপনার কিনে দেওয়া খেলনার চেয়েও সে হয়তো বাসার ছোটছোট জিনিস বা ফুল, পাতা, আলু, পটল নিয়ে খেলতে চাইবে। সেটিও স্বাভাবিক। এবং এটি বেশ উপকারীও। কেননা প্রাকৃতিক বস্তু নিয়ে খেলা শিশুর স্বাভাবিক বিকাশে সহায়ক।

মাঝেমাঝে আপনিও শিশুর খেলায় অংশগ্রহণ করুন। তাকে অধিকাংশ সময় জিতিয়ে দিন তবে কিছু সময় তাকে হারতেও দিন। শিশুদেরকে বাস্তব জীবনের জন্য প্রস্তুত হতে হার-জিত দুটোরই অভিজ্ঞতা থাকা উচিত। তাকে সবসময় জিতিয়ে দিলে পরবর্তিতে অন্য কোনো ক্ষেত্রে হেরে যাওয়াকে সে স্বাভাবিক ভাবে নিতে পারবেনা। সামান্য ব্যার্থতায় সে মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পরবে।

খেলাধুলাকে প্রতিযোগীতায় পরিনত করার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকুন। প্রতিযোগীতা প্রয়োজনীয় হলেও এটি সন্তানের উপর মানসিক চাপের সৃষ্টি করে। যা খেলাধুলার নির্মল আনন্দকে ব্যাহত করে। তাই খেলাধুলায় অংশগ্রহনের বিষয়ে অনুপ্রেরণা জোগান। ভালো করার বিষয়ে চাপ প্রয়োগ করবেন না।

উপরোক্ত বিষয় গুলো সাধারণ হলেও আমরা অনেকেই জানিনা যে এসবের নেতিবাচক দিকটি কিভাবে আমাদের শিশুদের উপর প্রভাব ফেলছে। তাই অভিভাবকদের অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে। শিশুদের স্বাভাবিক বিকাশে সুস্থ পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে, তাকে নিজে নিজে শিখে নেওয়ার সুযোগ দিতে হবে। শিশু শিক্ষাবিদ রেনাটে সিমার যথার্থই বলেছেন, ‘শিশুরা এভাবেই খেলার মধ্য দিয়ে তাদের জীবনের ছোট ছোট চাহিদাগুলো মেটানোর প্রস্তুতি নেয়৷’

তাই, শিশুকে খেলতে দিন। শিশুকে পর্যাপ্ত স্বাধীনতা দিন। সম্ভব হলে তাকে খোলা মাঠে সবুজ ঘাসের উপর দৌড়াতে দিন। কাদা, বালিতে বা মাটিতে খেলার সুযোগ দিন। স্বীয় কল্পনাশক্তি ও প্রকৃতির সাথে মিশে যাওয়ার মধ্য দিয়েই শিশুর মেধার বিকাশ ঘটবে।

Leave a Reply

scroll to top