সন্তানকে যে শিষ্টাচারগুলি শেখাবেন

babai-care.jpg

সন্তানকে শিষ্টাচার শেখানো তার অভিভাবকদের একটি অন্যতম গুরুদায়িত্ব। তাকে ভালো আচার-আচরণের গুরুত্ব বোঝানো ও এর প্রয়োগ শেখানোই মাধ্যমেই তার মানসীক ও নৈতিক বিকাশ ঘটে। তাই এই শিক্ষার শুরু হওয়া উচিত ছোট বয়স থেকেই। কেননা এই সময়ে তাদের যা শেখানো হয় তা খুব সহজেই তাদের মাথায় গেঁথে যায়।

আপনার সন্তানকে যে শিষ্টাচারগুলি শেখাবেনঃ

অনুমতি নেওয়াঃ তার নিজের নয় এমন কোনো জিনিসে হাত দেওয়ার আগে অবশ্যই অনুমতি নিতে শেখাতে হবে। এমনকি জিনিসটি যদি তার মা–বাবারও হয়, তবুও তাকে এই শিক্ষাটি দেওয়া প্রয়োজন। এবং ব্যবহারের পর অন্যের জিনিসটি আবার যথাস্থানে ফেরত দিয়ে আসতে হবে।

বিনয়ের সাথে চাওয়াঃ কোনো কিছু চাওয়ার ক্ষেত্রে বিনয়ী হতে হবে। ‘প্লিজ’ বা ‘দয়া করে’ ইত্যাদি শব্দের ব্যবহারের অভ্যাস করাতে পারেন। জিনিস প্রাপ্তির পর অবশ্যই ধন্যবাদ বলতে হবে। এই প্র্যাক্টিসের সাথে শিশুরা ছোট বয়স থেকেই অভ্যস্ত হলে পরবর্তিতে আপনাআপনিই এগুলোর ব্যবহার করতে থাকবে।

ভুল স্বীকার করাঃ কোনো ভুল করলে ‘স্যরি’ বা ‘দুঃখিত’ বলতে শেখা শুধু শিশুদের জন্য নয়, বরং পুরো সমাজের জন্যই খুব গুরুত্বপূর্ণ। ভুল বুঝতে পারা এবং সেজন্য দুঃখ প্রকাশ করা একটি বড় গুন যা শিশুদের বিনয়ী হতে শেখায়। তাই সন্তানকে শেখান কোন পরিস্থিতিতে ও কিভাবে দুঃখিত বলতে হবে।

বুলিং থেকে বিরত থাকাঃ বুলিং বর্তমানে সময়ে একটি অন্যতম সমস্যার বিষয়। কাউকে নিয়ে অনলাইন বা অফলাইনে ঠাট্টা করা, উপহাস করা এগুলোই বুলিং। শিশুদের যদি ছোট বয়স থেকেই এটি বোঝানো না হয় যে বুলিং করা অনুচিত, তাহলে সে ধরেই নেবে যে কাউকে নিয়ে ঠাট্টা বিদ্রুপ করা যায়। তাই অভিভাবকদের খুব সতর্কতার সাথে এই বিষয়টি শেখাতে হবে যেন তার কথার মাধ্যমে অন্য কেউ আঘাত না পায়।

সহানুভূতিশীল হওয়াঃ দয়াময় ও সহানুভূতিশীল হওয়া মানুষের শ্রেষ্ঠ গুন গুলোর একটি। তাই ছোটবেলা থেকেই শিশুদের সহানুভুতিশীল হওয়া শেখাতে হবে।

শেয়ার করতে শেখাঃ নিজের জিনিস, খেলনা, বা খাবার অন্যের সাথে শেয়ার করা বা ভাগ করে নেওয়ার শিক্ষা দেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি তাকে মানুষ হিসেবে সে বড় মনের অধিকারী হতে সাহায্য করবে।
গুছিয়ে রাখাঃ নিজের ব্যবহার্য জিনিস, খেলনা, ইত্যাদি কাজ শেষে গুছিয়ে রাখা খুবই ভালো একটি অভ্যাস। এর চর্চা অব্যাহত রাখলে সে বড় হয়েও পরিচ্ছন্নতা ও গুছিয়ে কাজ করার গুনার্জন করবে।
সৎ হওয়াঃ সততা, সত্যবাদীতা জীবনের মূল্য মন্ত্রের অন্যতম। তাই যেকোনো পরিস্থিতিতেই তাকে সত্যি কথায় অবিচল থাকতে শেখান।

তবে উপরোক্ত কাজ গুলো করতে হবে খুব ধৈর্য সহকারে। ধৈর্য ধারণ করাও একটি ভালো গুন যা শিশুরা আপনার থেকেই শিখবে। তাই সন্তাকে শেখানোর আগে অভিভাবক হিসেবে আপনাকেও যথাযথ শিষ্টাচার প্রদর্শন করতে হবে। শিশুরা যদি ভালো আচরন ও নিয়ম কানুন গুলি রপ্ত করে ফেলে তাহলে তা পরবর্তিতে তাদেরকে মুল্যবোধ সম্পন্ন মানুষ হিসেবে গড়ে তুলবে।

Leave a Reply

scroll to top